চারা গাছ লাগানোর পদ্ধতি - চারা গাছের পরিচর্যা
ভূমিকা
চারা গাছ লাগানোর পদ্ধতি
ফলের চারা রোপন, পরবর্তী পরিচর্যা
চারা গাছ লাগানোর পদ্ধতি
চারা গাছ লাগানোর পদ্ধতি:
সঠিক পদ্ধতিতে চারা গাছ লাগালে গাছ সুন্দরভাবে বৃদ্ধি পায় এবং ভালো ফলন হয়।
চারা গাছ লাগানোর জন্য পদক্ষেপ:
১. উপযুক্ত সময় নির্বাচন: চারা গাছ লাগানোর পদ্ধতি - চারা গাছের পরিচর্যা
- ফলের গাছের জন্য: শীতকাল (নভেম্বর - ফেব্রুয়ারী)
- শাকসবজির জন্য: বর্ষাকাল (জুন - সেপ্টেম্বর)
- সব গাছের জন্য: যেকোনো সময়
২. চারা সংগ্রহ:চারা গাছ লাগানোর পদ্ধতি - চারা গাছের পরিচর্যা
- স্থানীয় নার্সারি থেকে সুস্থ ও রোগমুক্ত চারা সংগ্রহ করুন।
- চারার মূল যেন ছেঁড়া না থাকে।
- পাতা যেন শুষ্ক বা পোকামাকড়ে আক্রান্ত না হয়।
৩. গর্ত তৈরি:চারা গাছ লাগানোর পদ্ধতি - চারা গাছের পরিচর্যা
- গর্তের আকার চারার চেয়ে দ্বিগুণ হওয়া উচিত।
- গর্তের গভীরতা চারার মূলের চেয়ে বেশি হওয়া উচিত।
- গর্তের মাটি আলগা করে নিন।
৪. সার প্রয়োগ:চারা গাছ লাগানোর পদ্ধতি - চারা গাছের পরিচর্যা
- গর্তের মাটিতে জৈব সার বা রাসায়নিক সার মিশিয়ে নিন।
- সারের পরিমাণ চারার প্রকারভেদ ও মাটির উর্বরতার উপর নির্ভর করে।
৫. চারা রোপণ: চারা গাছ লাগানোর পদ্ধতি - চারা গাছের পরিচর্যা
- গর্তের মাঝখানে চারা স্থাপন করুন।
- মূল যেন ভালোভাবে মাটির সাথে মিশে যায়।
- গর্ত মাটি দিয়ে ভরে নিন এবং চারার গোড়ায় পানি দিন।
৬. পর্যাপ্ত পরিচর্যা:চারা গাছ লাগানোর পদ্ধতি - চারা গাছের পরিচর্যা
- নিয়মিত পানি সেচ করুন।
- মাটি আর্দ্র রাখুন, তবে জলাবদ্ধ হওয়া যাবে না।
- আগাছা পরিষ্কার করুন।
- প্রয়োজনে সার প্রয়োগ করুন।
- রোগ ও পোকামাকড়ের আক্রমণ থেকে রক্ষা করুন।
কিছু টিপস:চারা গাছ লাগানোর পদ্ধতি - চারা গাছের পরিচর্যা
চারা গাছের পরিচর্যা
কৃষক ভাইরা আমারা জানি ফল প্রতিটি মানুষের কাছে সুখাদ্য হিসাবে সমাদৃত হয়ে আসছে। আধুনিক বিশ্বের প্রতিটি নাগরিকই জানেন দেহকে সুস্থ সবল রাখতে হলে ফলের প্রয়োজন অনিবার্য। ফলে রয়েছে আমিষ, শ্বেতসার, ভিটামিন, লৌহ ও ক্যালসিয়ামের মত পুষ্টি উপাদান। আধুনিক জ্ঞান বিজ্ঞানের যুগেও বলা হয় “ফলই বল”।
- ফল কেবল পুষ্টিমানেই ভরপুর নয়, ফল মুখরোচক, তৃপ্তিদায়ক এবং সুস্বাদুও বটে। অন্যান্য খাদ্য সামগ্রীর মত ফলের রান্নাজনিত ঝামেলা নেই কিংবা পুষ্টি কমে যাওয়ার আশংকা নেই এমনকি ভেজালেরও ভয় কম। আর শুধু খাদ্য হিসাবেই নয় প্রাকৃতিক ভারসাম্য বজায় রাখতে, ভূমি ক্ষয়রোধ করতে, জ্বালানী ও কাঠের অভাব মেটাতে, নানাবিধ ঔষুধের উপকরণ পেতে ফল গাছ সাহায্য করে থাকে। সুতরাং আমাদের জীবনে ফলের গুরুত্ব অপরিসীম।
- সুখের কথা আমাদের দেশে অনেক গুলো জনপ্রিয় ফল রয়েছে। দেশের গ্রামাঞ্চলে প্রায় যে কোন বসত বাড়ীর আঙ্গীনায় অথবা পিছনে কোন না কোন ফলের গাছ দেখা যায়। বাংলাদেশে কলা, পেঁপে, লেবু, নারিকেল, আম, কাঁঠাল, পেয়ারা, কুল , বাতাবীলেবু, শরীফা, আতা, ডালিম কামরাঙ্গা ইত্যাদি মিলে প্রায় ৭০ রকমের ফল জন্মে থাকে।
- একথা সত্য যে আমরা চাহিদা মাফিক ফল খেতে পাই না। পুষ্টি বিজ্ঞানীদের মতে একজন প্রাপ্ত বয়স্ক লোকের জন্য প্রতিদিন ২০০ গ্রাম ফল খাওয়া দরকার। অথচ আমরা পাচ্ছি মাত্র ৭৮ গ্রাম। প্রাচীন পদ্ধতিতে চাষাবাদ এর মূল কারণ। তাই ফলের চাহিদা মেটাতে হলে আধুনিক উপায়ে ফলের চাষ করা প্রয়োজন।
- আর ফলের চাষ করতে হলে আমাদরে জানতে হবে ফলরে চারা রােপন, সার প্রয়োগ ও যত্ন পরর্চিযা সম্পর্কে । তাই প্রথমইে বলব কভিাবে ফলরে চারা রোপন্ করা যায় । যে কোন ফল গাছের জন্য ভাল জাতের স্বাস্থ্যবান ও রোগমুক্ত চারা রোপন করতে হবে।
- রোপনের জন্য এমন স্থান নির্বাচন করতে হবে যেখানে ঘরবাড়ী বা বড় গাছের ছায়া না পড়ে আর পড়লে ও তা যাতে অল্প সময়ের জন্য পড়ে, স্থানটি উচু হতে হবে যাতে পানি জমে না যায়। একই ফলের একাধিক গাছ রোপনের বেলায় গাছ থেকে গাছের একটি নির্দিষ্ট দুরত্ব দিতে হবে এবং এই দুরত্ব বিভিন্ন ফলের চারার জন্য বিভিন্ন হয়ে থাকে যেমন আমের জন্য ৮-১২ মিটার, নারিকেলের জন্য ৬ মিটার, পেয়ারার বেলায় ৪-৬ মিটার ইত্যাদি।
বর্ষার শুরু বা বর্ষার শেষ চারা গাছ রোপনের উপযুক্ত সময় কেননা এ সময় গাছ রোপন করলে বেশী বর্ষা নামার আগেই যেমন শিকড় মাটির সাথে ভালভাবে লেগে যাবে বর্ষার পানি জমে চারা নষ্ট হবার সম্ভবনা কমে যাবে।
- তাই বৃক্ষ জাতীয় ফল গাছের চারা রোপনের উত্তম সময় জুন-জুলাই মাস। তবে পানি সেচের ব্যবস্থা থাকলে ডিসেম্বর ও জানুয়ারী মাস ব্যতীত যে কোন সময় চারা রোপন করা যেতে পারে। প্রায় বেশী ভাগ ফল গাছের জন্য ৬০-১০০ সে.মি. ব্যাস ও গভীরতা বিশিষ্ট গর্ত খনন করতে হবে। উঠানো মাটির সাথে প্রয়োজনীয় পরিমান সার ভালভাবে মিশিয়ে উপরের মাটি নীচে এবং নীচের মাটি উপরে দিয়ে গর্ত ভরাট করে রাখতে হবে এবং র্গত ভরাটের পর সেখানে পানি দিতে হবে ।
- অতপর ১৫-২০ দিন পর র্গতরে মাটি আবার উলট-পালট করে দতিে হবে । র্গত ভরাটের ১৫ দিন পর চারা লাগাতে হবে। তবে খেয়াল রাখতে হবে যে, রাসায়নিক সার এর পরিমান বেশী না হয়। বেশী হলে গাছের জন্য বিষক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে।
- তবে জৈব সার যেমন পচা গোবর, কম্পোষ্ট এসবের পরিমান বেশী হলেও ক্ষতি নেই। গর্তে সার দেবার একটা পরিমান আপনাদরেকে বলে দচ্ছিি । সটো হলো প্রতটিি র্গতরে জন্য পচা গোবর বা কম্পোষ্ট ২০-৩০ কেজি, টিএসপি ৪০০-৫০০ গ্রাম এবং এমপি ২০০-৩০০ গ্রাম ও জিপসাম ১০০-২৫০ গ্রাম দিতে হবে। তবে সারের পরিমান গাছের আকার প্রকার মাটির উর্বরতা এসবের সাথে সর্ম্পকিত।
- সাধারণত বিকেল বেলা চারা রোপন করতে হবে। রোপনের সময় খেয়াল রাখতে হবে যাতে কলমের চারার গোড়ার সাথে লাগানো মাটির বলটি ভেংগে না যায়। গর্তে লাগানের সময় আরো খেয়াল রাখতে হবে যাতে চারার কান্ডের ও শিকড়ের সংযোগস্থল গর্তের মাটির নীচেও না যায় আবার খুব বেশি উপরেও না থাকে। এটা মাটির সমান সমান থাকতে হবে।
- রোপনের পরপরই পানি সেচ দিয়ে গর্তের মাটি ভিজিয়ে দিতে হবে এবং পরবর্তী এক সপ্তাহ পর্যন্ত প্রতিদিন চারার গোড়ায় পানি সেচ দিতে হবে। একটি শক্ত ও মজবুত খুঁটি চারার ধারে গভীর ভাবে পুতে দড়ি দিয়ে খুঁটির সাথে চারা বেঁধে দিতে হবে এবং কোন খোলা জায়গায় লাগানো চারাকে গরু ছাগল থেকে বাঁচানোর জন্য বাঁশের বেড়া দিলে ভাল হয়। তবে চারাতে প্রথম প্রথম একটু ছায়া দেয়া উচিত।
- এখন কথা হলো চারা শুধু রোপন করলেই চলবে না এটার বাঁচা এবং বৃদ্ধির জন্য অবশ্যই একটা বাড়তি যত্ন পরিচর্যার দরকার এবং সেটা হলো চারা রোপনের পর সময় মত চারার গোড়ার মাটি নিড়ানী কিংবা কুপিয়ে আলগা করে দিতে হবে যাতে বায়ু চলাচল করতে পারে এবং রস সংরক্ষণের সুবিধা হয়।
চারার চারিদিকে অন্তত ১ মিটার পরিধির মধ্যে কোন প্রকার ঘাস জঙ্গল, আগাছা এসব জন্মাতে দেখলে সেগুলো পরিস্কার করে ফেলতে হবে। কারণ আগাছা নানা প্রকার পোকামাকড় ও রোগ জীবানুর আশ্রয়স্থল হিসাবে কাজ করে এবং গাছের খাবারে অংশ গ্রহণ করে।
এবার বলব সার প্রয়োগরে কথা-
চারা গাছে কতবার সার দিতে হয়?
চারা তৈরির পর্যায়ে, সাধারণত প্রতি দুই সপ্তাহে একবার আপনার গাছে সার দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। এটি চারাগুলির প্রাথমিক বৃদ্ধি এবং বিকাশকে সমর্থন করার জন্য পুষ্টির একটি ধারাবাহিক সরবরাহ প্রদান করে।
চারা গাছের জন্য কোন সার ভালো?
চারার উপর কি ধরনের সার ব্যবহার করতে হবে। একটি সর্ব-উদ্দেশ্য সার সন্ধান করুন যাতে নাইট্রোজেন (N) থেকে ফফরাস (P) থেকে পটাসিয়াম (K) এর সমান ভারসাম্য থাকে। একটি সর্ব-উদ্দেশ্য সার অল্প বয়স্ক উদ্ভিদকে একটি বলিষ্ঠ রুট সিস্টেম এবং সুস্বাদু, স্বাস্থ্যকর পাতা বিকাশে সহায়তা করবে।
আম গাছে কি সার প্রয়োগ করতে হবে?
প্রথম বছরে গাছ প্রতি ১৬০ গ্রাম ইউরিয়া, ২৫০ গ্রাম সিঙ্গল সুপার ফসফেট ও ১২৫ গ্রাম মিউরিয়েট অফ পটাশ দিন। এর সঙ্গে বয়স গুণ করে প্রতি বছর সারের পরিমাণ বাড়াতে হবে। অর্থাৎ ১০ বছরের গাছ হলে ১৬০০ গ্রাম ইউরিয়া, ২৫০০ গ্রাম সিঙ্গল সুপার ফসফেট, ১২৫০ গ্রাম মিউরিয়েট অফ পটাশ প্রয়োগ করতে হবে। এরপর সারের হার একই থাকবে।
Npk সার কিভাবে প্রয়োগ করতে হয়?
প্রয়োগকৃত ডোজ সম্পর্কে সতর্কতা অবলম্বন করার পাশাপাশি, এটি কীভাবে করা যায় সে সম্পর্কে সচেতন হওয়া অত্যাবশ্যক। কম্পোস্ট শিকড় এবং কান্ড থেকে দূরে রাখুন। পাত্রযুক্ত গাছগুলিতে, পাশে NPK প্রয়োগ করা এবং তারপর জল দেওয়া আদর্শ ।
সবজিতে কতবার সার দিতে হয়?
- সবজিতে কতবার সার দিতে হবে তা নির্ভর করে বিভিন্ন বিষয়ের উপর, যেমন:
- সবজির প্রকারভেদ: বিভিন্ন সবজির পুষ্টির চাহিদা আলাদা আলাদা হয়।
- মাটির উর্বরতা: উর্বর মাটিতে কম সারের প্রয়োজন হয়, অনুর্বর মাটিতে বেশি সার দিতে হয়।
- বৃদ্ধির পর্যায়: গাছের বৃদ্ধির বিভিন্ন পর্যায়ে পুষ্টির চাহিদাও আলাদা আলাদা হয়।
- আবহাওয়া: বৃষ্টিপাত বেশি হলে সার দ্রুত ধুয়ে যেতে পারে, তাই বৃষ্টির পর অতিরিক্ত সার দিতে হতে পারে।
তবে, সাধারণ নিয়ম হিসেবে বলা যায়:
- চারা রোপণের সময়: প্রথম সার প্রয়োগ করতে হয়।
- বৃদ্ধির শুরুর দিকে: দ্রুত বৃদ্ধির জন্য সার প্রয়োগ করা হয়।
- ফুল আসার সময়: ফলের উন্নত মানের জন্য সার প্রয়োগ করা হয়।
- ফল ধারণের সময়: ফলের আকার বৃদ্ধির জন্য সার প্রয়োগ করা হয়।
- সাধারণত, সপ্তাহে একবার বা দুই সপ্তাহে একবার সার প্রয়োগ করা হয়। তবে, উপরে উল্লেখিত বিষয়গুলো বিবেচনা করে সার প্রয়োগের পরিমাণ ও সময় নির্ধারণ করা উচিত।
- আমে কতবার সার দিতে হয়?
আম গাছে কতবার সার দিতে হবে তা নির্ভর করে বিভিন্ন বিষয়ের উপর, যেমন:
- আমের জাত: বিভিন্ন জাতের আমের গাছের পুষ্টির চাহিদা আলাদা আলাদা হয়।
- মাটির উর্বরতা: উর্বর মাটিতে কম সারের প্রয়োজন হয়, অনুর্বর মাটিতে বেশি সার দিতে হতে পারে।
- গাছের বয়স: ছোট গাছে বড় গাছের চেয়ে কম সারের প্রয়োজন হয়।
- আবহাওয়া: বৃষ্টিপাত বেশি হলে সার দ্রুত ধুয়ে যেতে পারে, তাই বৃষ্টির পর অতিরিক্ত সার দিতে হতে পারে।
তবে, সাধারণ নিয়ম হিসেবে বলা যায়:
- বছরে তিনবার সার দেওয়া ভালো।
- প্রথম সার: নতুন পাতা ও কুঁড়ি বের হওয়ার সময় (বসন্তকালে)
- দ্বিতীয় সার: ফুল আসার সময় (গ্রীষ্মের শেষের দিকে)
- তৃতীয় সার: ফল ধারণের সময় (শরতের শুরুতে)
প্রতিটি সার প্রয়োগের সময়, গাছের চারপাশে মাটি আলগা করে, প্রয়োজন অনুযায়ী সার প্রয়োগ করে, তারপর পানি দিয়ে ভিজিয়ে দিন।
সারের প্রকারভেদ:
- জৈব সার: গরুর সার, কম্পোস্ট, শেওলা ইত্যাদি।
- রাসায়নিক সার: ইউরিয়া, টিএসপি, এমওপি ইত্যাদি।
সাধারণত, জৈব সার ব্যবহার করা ভালো। তবে, মাটি পরীক্ষা করে নির্ধারণ করা উচিত কোন ধরণের সার প্রয়োজন।
কিছু টিপস:
- অতিরিক্ত সার প্রয়োগ করা থেকে বিরত থাকুন। এতে মাটির উর্বরতা নষ্ট হতে পারে এবং গাছের ক্ষতি হতে পারে।
- সার প্রয়োগের পর নিয়মিত পানি দিন।
- গাছের চারপাশে আগাছা পরিষ্কার রাখুন।
- প্রয়োজনে ছত্রাকনাশক ও কীটনাশক ব্যবহার করুন।
- গাছে কখন সার দিতে হয়?
গাছে কখন সার দেওয়া উচিত তা নির্ভর করে বিভিন্ন বিষয়ের উপর, যার মধ্যে রয়েছে:
- গাছের প্রকারভেদ: বিভিন্ন গাছের পুষ্টির চাহিদা আলাদা আলাদা হয়।
- ফলের গাছ: ফলের গাছে বেশি পরিমাণে সার প্রয়োজন হয়, বিশেষ করে ফল ধারণের সময়।
- শাকসবজি: শাকসবজিতে নিয়মিত সার প্রয়োজন হয়।
- সব গাছ: গাছে কম সার প্রয়োজন হয়।
মাটির উর্বরতা: উর্বর মাটিতে কম সারের প্রয়োজন হয়, অনুর্বর মাটিতে বেশি সার দিতে হতে পারে।
গাছের বয়স: ছোট গাছে বড় গাছের চেয়ে কম সারের প্রয়োজন হয়।
আবহাওয়া: বৃষ্টিপাত বেশি হলে সার দ্রুত ধুয়ে যেতে পারে, তাই বৃষ্টির পর অতিরিক্ত সার দিতে হতে পারে।
তবে, সাধারণ নীতি হিসেবে বলা যায়:
- বছরে দুই থেকে তিনবার সার দেওয়া ভালো।
- প্রথম সার: বসন্তের শুরুতে, যখন নতুন পাতা ও কুঁড়ি বের হয়।
- দ্বিতীয় সার: ফুল আসার সময়।
- তৃতীয় সার: ফল ধারণের সময় (শুধুমাত্র ফলের গাছের জন্য)।
- জৈব সার ব্যবহার করা ভালো।
- রাসায়নিক সার ব্যবহারের ক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন করুন।
- সার প্রয়োগের পূর্বে মাটি পরীক্ষা করে নিন।
- নির্দেশ অনুযায়ী সার ব্যবহার করুন।
- অতিরিক্ত সার প্রয়োগ করা থেকে বিরত থাকুন।
- সার প্রয়োগের পর নিয়মিত পানি দিন।
- গাছের চারপাশে আগাছা পরিষ্কার রাখুন।
- প্রয়োজনে ছত্রাকনাশক ও কীটনাশক ব্যবহার করুন।
আশানুরূপ ফলন পেতে হলে প্রতি বৎসর সময় মত এবং পরিমিত পরিমান সার প্রয়োগ করতে হবে। তবে গাছে ফল থাকা অবস্থায় সার না দিয়ে ফল পাড়ার পরেই সার দেয়া উত্তম। আম কাঁঠালের জন এটা বিশেষভাবে উপযোগী।
- গাছ বাড়ার সাথে সাথে প্রতি বৎসর সারের পরিমান বাড়িয়ে দিতে হবে। প্রতটিি ফল গাছরে জন্য বয়স অনুপাতে নর্ধিারতি যে পরমিাণ সার প্রয়োগ করতে হয় তার র্অধকে পরমিাণ সার র্বষার আগে র্মাচ-এপ্রলি মাসে একবার এবং বাকি র্অধকে সার র্বষার পরে স্েপ্টম্বের-অক্টোবর মাসে আরও একবার প্রয়ােগ করতে হবে ।
- গাছের একেবারে গোড়াতে কখনো সার দেয়া উচিত নয়। গাছের গোড়া থেকে ৫০-১০০ সে.মি. দুর থেকে সার দিতে হবে। গাছের ডালপালা যতদুর পর্যন্ত ছড়িয়ে থাকে ততদুর পর্যন্ত মাটি হালকাভাবে কুপিয়ে সারের উপরি প্রয়োগ করতে হবে। তারপর পানি সেচ দিয়ে কয়েকদিন পর মাটি শুকনো বা জো অবস্থায় আবার হালকা করে কুপিয়ে মালচিং করে দিলে ভাল হবে।
- তারপর গাছ যখন বড় হতে থাকে তখন আসে ছাঁটাই এর কথা অর্থাৎ ছাঁটাই করণ বৃক্ষজাতীয় গাছগুলোর জন্য একটি উল্লেখযোগ্য বিষয় প্রথম প্রথম কয়েক বৎসর এটা খেয়াল রাখা দরকার যাতে তাদের একটি প্রধান কান্ড ভালভাবে বেড় ওঠে।
আম, পেয়ারা লেবু, কাঁঠাল, বাতাবীলেবু এসব গাছের জন্য এই ছাঁটাই বিশেষ প্রয়োজন যাতে গাছ সুন্দর একটা ছাতার মত আকৃতি দিয়ে বেড়ে উঠবে। আর একটা বিশেষ দিক খেয়াল রাখতে হবে সেটা হলো রোগ পোকামাকড় এর আক্রমন দেখা দিলে সাথে সাথে সেটা দমনের উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে হবে।
চারা গাছের পরিচর্যা
চারা গাছের পরিচর্যা:
চারা গাছের সুন্দর বৃদ্ধি ও সমৃদ্ধ ফলনের জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিতে হয়। নিচে সেগুলি তুলে ধরা হলো:
মাটি:চারা গাছ লাগানোর পদ্ধতি - চারা গাছের পরিচর্যা
- চারা রোপণের জন্য সাধারণ বাঁ花園 মাটি ব্যবহার করা যেতে পারে।
- মাটির pH 6.0 থেকে 6.5 এর মধ্যে রাখা ভালো।
- জৈব সার যোগ করে মাটির উর্বরতা বাড়ানো যেতে পারে।
রোদ:চারা গাছ লাগানোর পদ্ধতি - চারা গাছের পরিচর্যা
- বেশিরভাগ চারা গাছের জন্য পূর্ণ রোদ প্রয়োজন।
- তবে কিছু গাছ আংশিক ছায়া পছন্দ করে।
পানি:চারা গাছ লাগানোর পদ্ধতি - চারা গাছের পরিচর্যা
- নিয়মিত পানি সেচ প্রয়োজন।
- মাটি আর্দ্র রাখতে হবে, তবে জলাবদ্ধ হওয়া যাবে না।
- সকালে পানি দেওয়া ভালো।
সার:চারা গাছ লাগানোর পদ্ধতি - চারা গাছের পরিচর্যা
- জৈব সার বা রাসায়নিক সার ব্যবহার করা যেতে পারে।
- সার প্রয়োগের পূর্বে মাটি পরীক্ষা করে নেওয়া ভালো।
- নির্দেশ অনুযায়ী সার ব্যবহার করতে হবে।
আগাছা:চারা গাছ লাগানোর পদ্ধতি - চারা গাছের পরিচর্যা
- নিয়মিত আগাছা পরিষ্কার করতে হবে।
- আগাছা মাটির পুষ্টি ও পানি শোষণে বাধা দেয়।
রোগ ও পোকামাকড়:চারা গাছ লাগানোর পদ্ধতি - চারা গাছের পরিচর্যা
- রোগ ও পোকামাকড়ের আক্রমণ থেকে গাছকে রক্ষা করতে হবে।
- প্রয়োজনে কীটনাশক বা ছত্রাকনাশক ব্যবহার করা যেতে পারে।
অন্যান্য:
- প্রয়োজনে গাছ ছাঁটাই করতে হবে।
- বৃষ্টির পর মাটি আলগা করে দিতে হবে।
- গাছের গোড়ায় মালচিং করা যেতে পারে।
- স্থানীয় নার্সারি থেকে সুস্থ ও রোগমুক্ত চারা কিনুন।
- চারা রোপণের পূর্বে মাটি ভালো করে তৈরি করে নিন।
- চারা রোপণের পর পানি দিন।
- নিয়মিত গাছের পরিচর্যা করুন।
এই পদ্ধতিগুলো অনুসরণ করলে আপনার চারা গাছ সুন্দরভাবে বৃদ্ধি পাবে এবং ভালো ফলন হবে।
আম গাছে সার প্রয়োগ পদ্ধতি
আম গাছে সার প্রয়োগ পদ্ধতি:
আম গাছে সার প্রয়োগ গাছের সুন্দর বৃদ্ধি ও উন্নত ফলনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
কখন সার প্রয়োগ করবেন:
- বছরে তিনবার সার প্রয়োগ করা উচিত।
- প্রথম সার: নতুন পাতা ও কুঁড়ি বের হওয়ার সময় (বসন্তকালে)
- দ্বিতীয় সার: ফুল আসার সময় (গ্রীষ্মের শেষের দিকে)
- তৃতীয় সার: ফল ধারণের সময় (শরতের শুরুতে)
কোন সার ব্যবহার করবেন:
জৈব সার: গরুর সার, কম্পোস্ট, শেওলা ইত্যাদি।
রাসায়নিক সার: ইউরিয়া, টিএসপি, এমওপি ইত্যাদি।
সাধারণত, জৈব সার ব্যবহার করা ভালো। তবে, মাটি পরীক্ষা করে নির্ধারণ করা উচিত কোন ধরণের সার প্রয়োজন।
প্রতিটি সার প্রয়োগের পরিমাণ:
- গাছের বয়স, আকার ও জাতের উপর নির্ভর করে।
- সাধারণত, প্রতি বছর বয়স বাড়ার সাথে সাথে সারের পরিমাণ বাড়ানো হয়।
- স্থানীয় কৃষি বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
সার প্রয়োগের পদ্ধতি:
- গাছের চারপাশে মাটি আলগা করে নিন।
- সার গাছের গোড়া থেকে কিছুটা দূরে ছিটিয়ে দিন।
- মাটি দিয়ে ঢেকে দিন এবং পানি দিয়ে ভিজিয়ে দিন।
কিছু টিপস:চারা গাছ লাগানোর পদ্ধতি - চারা গাছের পরিচর্যা
- অতিরিক্ত সার প্রয়োগ করা থেকে বিরত থাকুন। এতে মাটির উর্বরতা নষ্ট হতে পারে এবং গাছের ক্ষতি হতে পারে।
- সার প্রয়োগের পর নিয়মিত পানি দিন।
- গাছের চারপাশে আগাছা পরিষ্কার রাখুন।
- প্রয়োজনে ছত্রাকনাশক ও কীটনাশক ব্যবহার করুন।
ফল গাছে সার প্রয়োগ পদ্ধতি
ফল গাছে সার প্রয়োগ পদ্ধতি:
ফল গাছে সার প্রয়োগ গাছের সুন্দর বৃদ্ধি, উন্নত ফলন এবং পুষ্টিগুণ বৃদ্ধির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
কোন ধরণের সার ব্যবহার করবেন:
- জৈব সার: গরুর সার, কম্পোস্ট, শেওলা, নيمের খোল, পচা সবুজ পাতা ইত্যাদি।
- রাসায়নিক সার: ইউরিয়া, টিএসপি, এমওপি, জিপসাম ইত্যাদি।
- সাধারণত, জৈব সার ব্যবহার করা ভালো। কারণ এতে দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব থাকে এবং মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি পায়। তবে, মাটি পরীক্ষা করে নির্ধারণ করা উচিত কোন ধরণের সার প্রয়োজন।
কখন সার প্রয়োগ করবেন:
- বছরে তিনবার সার প্রয়োগ করা উচিত।
- প্রথম সার: নতুন পাতা ও কুঁড়ি বের হওয়ার সময় (বসন্তকালে)
- দ্বিতীয় সার: ফুল আসার সময় (গ্রীষ্মের শেষের দিকে)
- তৃতীয় সার: ফল ধারণের সময় (শরতের শুরুতে)
প্রতিটি সার প্রয়োগের পরিমাণ:
- গাছের বয়স, আকার ও জাতের উপর নির্ভর করে।
- সাধারণত, প্রতি বছর বয়স বাড়ার সাথে সাথে সারের পরিমাণ বাড়ানো হয়।
- স্থানীয় কৃষি বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
সার প্রয়োগের পদ্ধতি:
- গাছের চারপাশে মাটি আলগা করে নিন।
- সার গাছের গোড়া থেকে কিছুটা দূরে ছিটিয়ে দিন।
- গর্ত করে সার মাটিতে মিশিয়ে দিন।
- মাটি দিয়ে ঢেকে দিন এবং পানি দিয়ে ভিজিয়ে দিন।
- অতিরিক্ত সার প্রয়োগ করা থেকে বিরত থাকুন। এতে মাটির উর্বরতা নষ্ট হতে পারে এবং গাছের ক্ষতি হতে পারে।
- সার প্রয়োগের পর নিয়মিত পানি দিন।
- গাছের চারপাশে আগাছা পরিষ্কার রাখুন।
- প্রয়োজনে ছত্রাকনাশক ও কীটনাশক ব্যবহার করুন।
- গাছের পাতায় সার স্পর্শ করলে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
আরও তথ্যের জন্য:
মনে রাখবেন, প্রতিটি গাছের নিজস্ব চাহিদা থাকে। তাই স্থানীয় কৃষি বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে সার প্রয়োগ করা উচিত।
ইউরিয়া সার প্রয়োগ পদ্ধতি
ইউরিয়া সার প্রয়োগ পদ্ধতি:
ইউরিয়া সার দ্রুতশোষী নাইট্রোজেন সার হিসেবে পরিচিত। এটি ফসলের বৃদ্ধি, পাতা সবুজ রাখা এবং ফলন বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
কোন ধরণের ফসলে ইউরিয়া সার ব্যবহার করা যায়:
- ধান
- পাট
- আখ
- গম
- ভুট্টা
- সবজি
- ফলের গাছ
কখন ইউরিয়া সার প্রয়োগ করা উচিত:
- ধান: রোপণের পর 15-20 দিন পর, বীজতলায়, কালচে, শীষ বের হওয়ার সময়
- পাট: বীজ বপনের পর 10-15 দিন পর, কালচে, ডালচে
- আখ: রোপণের পর 30-45 দিন পর, কালচে, মাটি ঢাকার সময়
- গম: বীজ বপনের পর 20-25 দিন পর, কালচে, বীজতলায়
- ভুট্টা: বীজ বপনের পর 15-20 দিন পর, কালচে, শীষ বের হওয়ার সময়
- সবজি: বীজ বপনের পর 10-15 দিন পর, আগাছা দমনের সময়
- ফলের গাছে: নতুন পাতা ও কুঁড়ি বের হওয়ার সময়, ফুল আসার সময়, ফল ধারণের সময়
ইউরিয়া সার প্রয়োগের পরিমাণ:
- ফসলের প্রকার, জাত, মাটির উর্বরতা এবং আবহাওয়ার উপর নির্ভর করে।
- সাধারণত, প্রতি বিঘায় 10-20 কেজি ইউরিয়া সার ব্যবহার করা হয়।
- স্থানীয় কৃষি বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
ইউরিয়া সার প্রয়োগের পদ্ধতি:
- ইউরিয়া সার সরাসরি মাটিতে ছিটিয়ে দিতে পারেন অথবা পানিতে মিশিয়ে দিয়ে গাছের গোড়ায় দিতে পারেন।
- সার প্রয়োগের পর হালকা সেচ দিন।
- গাছের পাতায় সার স্পর্শ করলে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
কিছু টিপস:চারা গাছ লাগানোর পদ্ধতি - চারা গাছের পরিচর্যা
- অতিরিক্ত ইউরিয়া সার প্রয়োগ করা থেকে বিরত থাকুন। এতে মাটির উর্বরতা নষ্ট হতে পারে এবং গাছের ক্ষতি হতে পারে।
- ইউরিয়া সার শুষ্ক ও ঠান্ডা স্থানে সংরক্ষণ করুন।
- সার প্রয়োগের সময় সাবধানতা অবলম্বন করুন।
তাই সবশষেে বলব ফলরে চারা রোপন ও সঠকি যত্ন পরর্চিযার মাধ্যমে ফল উৎপাদন বৃদ্ধি করে একদকিে দশেরে মানুষরে পুষ্টরি অভাব পুরুন হবে এবং কৃষক ভাইয়রো র্আথকিভাবে অনকে লাভবান হবনে তাতে কোন সন্দহে নাই ।
উপসংহার
প্রিয় পাঠক আজ চারা গাছ লাগানোর পদ্ধতি - চারা গাছের পরিচর্যা বিষয় নিয়ে আলোচনা করলাম। আগামীতে অন্য কোনো বিষয় নিয়ে আলোচনা করব। আশা করছি উপরের চারা গাছ লাগানোর পদ্ধতি - চারা গাছের পরিচর্যা আলোচনা আপনার ভালো লেগেছে। এ সমন্ধে যদি কোন প্রশ্ন থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানান আর আপনার ফ্রেন্ড সার্কেলে এই কনটেন্টটি শেয়ার করতে ভুলবেন না। আমাদের সাথেই থাকুন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url