বারি ফুলকপি-৩ (গ্রীষ্মকালীন) চাষ পদ্ধতি - রোগবালাই ও দমন ব্যবস্থাপনা

প্রিয় পাঠক আজ আমরা আলোচনা করব বারি ফুলকপি-৩ (গ্রীষ্মকালীন) চাষ পদ্ধতি - রোগবালাই ও দমন ব্যবস্থাপনা , রোগ বালাই দমন ব্যবস্থাপনা সার ও সেচ প্রয়োগ পদ্ধতি এবং সবজি ফসলের পরিচর্যা নিয়ে।
তো চলুন আর দেরি না করে শুরু করি বারি ফুলকপি-৩ (গ্রীষ্মকালীন) চাষ পদ্ধতি বা রোগবালাই ও দমন ব্যবস্থাপনা। বিস্তারিত জানার জন্য এই লেখার পড় অংশ পড়ে ফেলুন।

বারি ফুলকপি-৩ (গ্রীষ্মকালীন) চাষ পদ্ধতি - রোগবালাই ও দমন ব্যবস্থাপনা

বারি ফুলকপি-৩ (গ্রীষ্মকালীন)

বৈশিষ্ট্য : গ্রীষ্ম কালীন জাত বীজ বপনের ৮০ দিনের মধ্যে কপি সংগ্রহ করা যায় কপির রং-সাদা, আকার-মাঝারি, গঠন- মজবুত কপির গড় ওজনঃ ৪২০ গ্রাম ফলনঃ ১৫-১৬ টন/হেঃ

উপযোগী এলাকা : সমগ্র বাংলাদেশ

বপনের সময় : জুন-জুলাই

মাড়াইয়ের সময়: বীজ বপনের ৮০ দিনের মধ্যে কপি সংগ্রহ করা যায় (সেপ্টেম্বর- অকটবর)

বীজ/চারার হার: ২০০০২২৫ গ্রাম/হেঃ

বপন/ রোপনের দূরত্ব: ৬০ x ৪৫ সেমি

ফলন: ১৫-১৬ টন/হেঃ (গ্রীষ্মকালীন)

বারি ফুলকপি-৩

রোগবালাই ও দমন ব্যবস্থা

রোগবালাই:
  • দমন ব্যবস্থা: দাগ রোগ বা স্পট 
  • সুষম সার ও নিয়মিত সেচের ব্যবস্থা করা। 
  •  উপযুক্ত শস্য পর্যায় অবলম্বন করা। 
  • অনুমোদিত ছত্রাকনাশক যেমন রোভরাল @ ২ গ্রাম/ লিটার পানিতে মিশিয়ে গাছে ১০-১২ দিন অন্তর স্প্রে করা।
পোকামাকড় ও দমন ব্যবস্থা


পোকামাকড়: কাটুই পোকা 
  • ভোর বেলা কর্তিত চারার গোড়া খুঁড়ে কীড়াগুলো মেরে ফেলা। 
  • টর্চ বা হারিকেন নিয়ে রাতের বেলা কাটুই পোকার কীড়া সংগ্রহ করে মেরে ফেলা। 
  • ক্ষেতে সেচ দিলে মাটির নিচে লুকিয়ে থাকা কীড়া মাটির উপরে উঠে আসে, ফলে সহজে পাখি এদরে ধরে খায় এবং হাত দিয়ে মেরে ফেলা যায়। 
দমন ব্যবস্থা: 
বিষটোপ দিয়ে এ পোকা দমন করা যায়। বিষটোপ হিসেবে শতাংশ প্রতি ২ গ্রাম সেভিন/কার্বারিল ৮৫ ডব্লিউ পি অথবা পাদান ৫০ এসপি, ৪০০ গ্রাম গম বা ধানের কুঁড়ার সাথে পরিমাণমত পানিতে মিশিয়ে এমন একটি বিষটোপ তৈরি করতে হবে যা হাত দিয়ে ছিটানো যায়। 

এ বিষটোপ সন্ধ্যাবেলা আক্রান্ত ক্ষেতে চারাগাছের গোড়ায় ছিটিয়ে প্রয়োগ করলে কাটুই পোকার কীড়া দমন সহজ হয়। 

আক্রমণ বেশী হলে অনুমোদিত কীটনাশক প্রয়োগ করতে হবে। প্রোডেনিয়া ক্যাটারপিলার বা টোবাকো ক্যাটারপিলার 

পোকার দল প্রথম দিকে দলবদ্ধ অবস্থায় থাকে সেজন্য প্রতিটি গাছ যত্ন নিয়ে দেখলেই পাতায় কীড়া খাওয়া চিহ্ন সহজেই চোখে পড়ে। ঐ অবস্থায় আক্রান্ত পাতা কীড়াসহ গাছ থেকে ছিড়ে নিয়ে পা দিয়ে পিষে মেরে ফেলতে হবে এবং ছড়িয়ে পড়া বড় কীড়াগুলোকে ধরে ধরে মেরে ফেলতে হবে। 

আক্রমণ বেশী হলে স্পর্শ বিষ যেমন সাইপারমেথ্রিন জাতীয় কীটনাশক (রিপকর্ড/সিমবুস/বাসাথ্রিন/এরোসাইপামেথ্রিন ১০ তরল) প্রতি লিটার পানির সাথে ১ মিলি হারে মিশিয়ে ১৫ দিন অন্তর ২-৩ বার গাছে স্প্রে করতে হবে। তবে কীটনাশক প্রয়োগের ২ সপ্তাহের মধ্যে খাওয়ার জন্য কোন কপি সংগ্রহ করা যাবে না ।

সার ব্যবস্থাপনা

বিঘা প্রতিঃ 
গোবর ১২০০ কেজি ইউরিয়া ৩০ কেজি টিএসপি ৩০ কেজি এমওপি ২৫ কেজি জিপসাম ১২ কেজি বোরন ১ কেজি জিংক অক্সাইড ১ কেজি এলুমুনিয়াম মলিবডেট ১/২ কেজি জমি তৈরির সময় অর্ধেক গোবর সার প্রয়োগ করতে হবে। 

বাকী অর্ধেক গোবর, সম্পূর্ণ টিএসপি, জিপসাম, বোরন, জিংক অক্সাইড এবং ১/৩ ভাগ এমওপি চারা লাগানোর গর্তে প্রয়োগ করে ৭ দিন রেখে দিতে হবে। পরবর্তীতে ইউরিয়া এবং এমওপি সার চারা লাগানোর ২০, ৪০ এবং ৬০ দিন পর অর্থাৎ চারার বৃদ্ধি পর্যায়ে, ফুল ও ফল ধরার সময় তিন ভাগ করে প্রয়োগ করতে হবে।

আজকের এই বারি ফুলকপি-৩ (গ্রীষ্মকালীন) চাষ পদ্ধতি - রোগবালাই ও দমন ব্যবস্থাপনা সম্পর্কিত লেখাটি যদি আপনার ভালো লাগে তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধুদের মধ্যে শেয়ার করে দিন।

আপনার সবজির ফসল সম্পর্কিত যেকোনো প্রশ্নোত্তরের জন্য ফোন করতে পারেন নিচের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সবজি ফসল বিশেষজ্ঞের সাথে। তাছাড়াও যে কোন সমস্যার জন্য লিখতে পারেন আমাদের কমেন্ট বক্সে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url